হাইপোগ্লাইসেমিয়া কি ও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করনীয় - Hypoglycemia and It's Management

 

hypoglycemia-and-management

হাইপোগ্লাইসেমিয়া কি ও হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে করনীয় - Hypoglycemia and It's Management

Hypoglycaemia (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা রক্তে সুগার কমে যাওয়া

Hypoglycaemia (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) অবস্থাটি অত্যন্ত মারাত্বক এবং কমন একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি। সাধারণত যারা ডায়াবেটিসে ভোগেন তাদের রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার (sugar) পরিমাণ কমে গেলে এই Hypoglycaemia (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) অবস্থার সৃষ্টি হয়। এর ফলে নানান উপসর্গ দেখা দেয়; এমনকি রক্তের সুগার বেশি কমে গেলে রোগী জ্ঞান হারিয়ে কোমা-তে চলে যেতে পারেন এমন কি তার থেকে মৃত্যুও হতে পারে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া যদি বেশী হয়, তাহলে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে; বারবার হাইপো হলে, অনেক সময় হাইপো অবস্থা সৃষ্টি হবার যেসব ইঙ্গিত আগে থেকে পাওয়া যায়, সেগুলি বুঝতে পারার ক্ষমতাও কমে যেতে থাকে। 

হাইপোগ্লাইসেমিয়া -এর উপসর্গ - Signs of Hypoglycaemia

একজন ডায়াবেটিস রোগীর অনেক কারণেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে, যেমন- সঠিক মাত্রায় ওষুধ ব্যবহারের কারণে, খাদ্যে অনিয়ম করলে, বেশি পরিশ্রম বা ব্যায়াম করলে, ইত্যাদি।

ভাল থাকুন ডট কম  (ValoThakun.Com) এর আজকের লেখা  হাইপোগ্লাইসেমিয়া নিয়ে

হাইপোগ্লাইসেমিয়া-এর উপসর্গ বা লক্ষণগুলো হল-

  • মাথা ঘুরা
  • হতচকিত বা অচেতন অবস্থা
  • মাথা ধরা বা ঝিমঝিম করা
  • প্রচুর খিদে পাওয়া
  • বুক ধড়ফড় করা
  • অতিরিক্ত ঘামা
  • অত্যন্ত দূর্বল বোধ করা
  • শরীর কাঁপতে থাকা ও শীতল হয়ে আশা
  • ভয় পাওয়া

এসব লক্ষণ যদি আসে এবং তা যদি অবহেলা করা হয় তাহলে- মনোসংযোগের ক্ষমতা হারানো, জিভ এবং মুখ অসার হয়ে যাওয়া , জ্ঞান হারানো বা কোমাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


 হাইপোগ্লাইসেমিয়া কেন হয় - Why Hypoglycaemia occurs?

এর একাধিক কারণ থাকে - সবসময়ে সেগুলি ধরতেও পারা যায় না। ডায়াবেটিসের বেশী ওষুধ নিয়ে নেওয়া বা নিতে ভুলে যাওয়া, সময়মত খাবার না খাওয়া, কম খাবার খাওয়া, নিয়মের বাইরে বেশী এক্সারসাইজ করা, উষ্ণ আবহাওয়া, বেশী মদ্যপান করা - ইত্যাদি নানা করণে হাইপো হতে পারে।

ডায়াবিটিসকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে অনেকে ইনসুলিন ব্যবহার করেন, কিন্তু হাইপো হবার একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রয়োজনের বেশি ইনসুলিন নেয়া। ইনসুলিনের ডোজ নির্ণয় নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের ইপর। খাবারের পরিমাণ, কি ধরণের খাবার, পর পর দুটি খাবার গ্রহণের মাঝের সময়ের ব্যবধান, ব্যায়ামের পরিমাণ - ইত্যাদির উপর নির্ভর করে রক্তে স্যুগারের ওঠা-নামা। মদপান মানুষের রক্তে স্যুগারের পরিমাণ কমায়। এছাড়া, গর্ভধারণ করলে বা স্তন্যদান করলে রক্তে স্যুগারের পরিমাণ কমে যায়।

 ভাল থাকুন ডট কম  (ValoThakun.Com) এর আজকের লেখা  হাইপোগ্লাইসেমিয়া Hypoglycaemia নিয়ে


হাইপোগ্লাইসেমিয়া - এর চিকিৎসা -Treatment of Hypoglycaemia

যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।

শর্করা-যুক্ত খাবার খাওয়ার পরেও যদি কারো রক্তে স্যুগারের পরিমাণ কমে যায়, তবে তিনি ’রি-অ্যাক্টিভ হহাইপোগ্লাইসেমিয়াতে’ ভুগছে। এক্ষেত্রে চিনি যুক্ত বা শর্করা জাতীয় খাবার না খাওয়াই উচিত। এক্ষেত্রে পরিমাণে অল্প কিন্তু ঘন ঘন খাবার গ্রহণ করা উচিত।

যদি কারো অনেকক্ষণ না খেলে Hypoglycaemia (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) হয়, তবে তাকে ঘুমোতে যাবার আগে  প্রোটিন-যুক্ত খাবার খেতে হবে। প্রটিন অনেকক্ষণ মানুষের রক্তে শর্করা

সরবরাহ করতে পারে। ইনসুলিনের ডোজ বেশী নেয়ায় হাইপো হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডোজ কমিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সম্ভবনা কমানো যায়।

এছাড়া , হাইপো হচ্ছে বুঝতে পারলে,  আধ-কাপ ফলের রস, এক চামচ চিনি বা সিরাপ, আধ-কাপ কোকাকোলা, মিষ্টি চকলেট ইত্যিাদি খেয়ে হাইপো অবস্থা এড়ানো যায়।

মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট পরে, রক্তে স্যুগারের পরিমাণ দেখতে হবে। তখনো যদি স্যুগারের পরিমাণ 70mg/dl (মিলিগ্রাম/ ডেসিলিটার)-এর চেয়ে কম থাকে, তবে তাকে আরও খাবার খেতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঘটনা বারবার ঘটলে, হাইপে হবার সময়, সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী, রক্তে স্যুগারের পরিমাণ ইত্যাদি একটা নোটবুকে লিখে রাখা উচিত। পরে নোটবুকটি চিকিৎসককে দেখিয়ে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ঠিক করে নেয়া উচিত।

অনেক সময়ে হাইপো-র ফলে জ্ঞান হারানোর একটা সম্ভাবনা থাকে। জ্ঞান হারালে রোগীকে গ্লুকাগন ইঞ্জেকশন দেওয়া দরকার। ডায়াবেটিস রোগীর বাড়ির কেউ যাতে এটি দিতে পারেন, সেটা দেখা দরকার।

 

হাইপো অবস্থা  বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া এড়ানোর উপায় - How to avoid Hypoglycaemia

যারা ডায়াবেটিসে ভুগছে তারা হাইপো অবস্থা এড়াতে পারেন, যদি -

    • চিকিৎসকের নির্দেশমত এবং সময়মত খাওয়াদাওয়া করেন।
    • ডাক্তারের নির্দেশমত এক্সারসাইজ করেন।
    • সঠিক পরিমাণ ইনসুলিন এবং ডায়াবেটিসের অন্য ওষুধ নেন।
    • ওষুধের তীব্রতা কখন সবচেয়ে বেশী থাকে - সেই সময়টা জেনে – সেই সময়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকেন।
    • পকেটে সবসময়ে চিনিযুক্ত খাবার রাখেন।
    • একটু খারাপ বোধ করলেই সাথে সাথে রক্তে শর্করার পরিমাপ মেপে দেখবেন এবং সেটি কমে যাবার আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

-----------------------------------------------------

ভাল থাকুন ডট কম  (ValoThakun.Com) ব্লগ থেকে আরো পড়ুন-

Weight loss tips বা ওজন কমানো 'র সহজ টিপস

অ্যালজাইমার্স : বয়স্কদের ভুলে যাওয়া রোগ -  Alzheimer's : Memory Problems In Elderly

----------------------------------------------------

ডা. হাসান ইবনে আমিন


মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কোন পরামর্শ বা মতামত থাকলে জানান। :-)